এক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পাঁচ মাইল পিছনে আমরা তখন অবসররত। গতকালই আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। পেট আমাদের ভর্তি এখন গােমাংস আর সীম কড়াইশুটিতে। যুদ্ধ শেষ, আমরা সন্তুষ্ট। এছাড়া প্রতিটি সৈনিককে সান্ধ্য-আহারের জন্য দেওয়া। হয়েছে ভােজন-পাত্র ভর্তি খাবার। এরকম সৌভাগ্য আমাদের হয়নি অনেকদিন। ওদিকে লাল চুলের পাচক খাবার জন্য পীড়াপীড়ি করছে আমাদের। ট্যাডেন আর মুলার এগিয়ে দিয়েছে দুটি হাত ধােবার বেসিন, কানায় কানায় ভর্তি খাবার, ভবিষ্যতের সঞ্চয় । ট্যাডেনের কাছে এটা গােগ্রাসে গেলার জন্যে, আর এটা মূলারের দূরদর্শিতা। এখনাে আরাে উল্লেখযােগ্য ব্যাপার হলাে ধূমপানের ডবল রেশন। দশটা সিগার, কুড়িটা সিগারেট বরাদ্দ করা হয়েছে প্রতিটি সৈনিকের জন্য। সত্যি কথা বলতে কী, এতসব আমাদের পাওনা নয়। প্রুশিয়ানরা এত উদার নয়। চোদ্দ দিন আগে রণক্ষেত্রে ছুটে যেতে হয়েছিল আমাদের আহত সৈনিকদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্যে। শুরুতে আমাদের সেক্টরটা ছিল শান্ত। তাই পুরাে এক কোম্পানি, অর্থাৎ দেড়শােজন সৈনিকের রেশনের ফরমাশ দেন কোয়ার্টারমাস্টার। কিন্তু শেষদিন ইংরেজরা অবিরাম বােমাবর্ষণ চালায়, যার ফলে আমাদের জীবিতের সংখ্যা কমে গিয়ে শেষপর্যন্ত দাঁড়ায় মাত্র আশিতে। ভালাে ঘুমের একটা আস্তানা পাওয়ার জন্যে গতকাল রাত্রে একটু পিছু হটতে হয়েছিল আমাদের। একটু ঘুমােতে পারলে যুদ্ধ আদৌ খারাপ নয়, ঠিকই বলেছে কাজিনস্কি। আমাদের পরে কেউ ছিল না তখন। আর একনাগাড়ে চোদ্দ দিনবড় দীর্ঘ সময়। | তখন দুপুর, সবাই যে-যার ভােজনপাত্র হাতে নিয়ে রসুইখানার সামনে গিয়ে ভিড় জমাল। লম্বা লাইনের একেবারে মাথায় দাড়িয়েছিল ক্ষুধার্ত কৃশকায় আলবার্ট ক্রপ, আমাদের মধ্যে ওর চিন্তাধারাই সবথেকে বেশি পরিষ্কার, ও একজন ল্যান্স