মুহাম্মদ আবুল হুসাইন ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক পদে কর্মরত। পেশাগত কারণেই তাঁকে নিয়মিতভাবে লাইফ-স্টাইল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে নিয়মিত লেখার জন্য বিভিন্ন বিদেশী পত্রিকা ও ম্যাগাজিন পড়তে হয়। ছাত্রজীবন: সাফল্যের শর্তাবলী বইটি শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে তাঁর নিবিড় অধ্যয়ন ও গবেষণার ফল। তিনি মনে করেন, জাতি গঠনের জন্য জাতির ভবিষ্যত তথা ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে বিশেষ নজর দেয়া দরকার। তাই তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিকাশে বিশেষ নজর দেয়া দরকার। এই অনুভূতিই তাকে এই বইটি লিখতে প্রেরণা যোগায়। একই কারণে এর আগে তিনি তরুণ-যুবকদেরকে স্বাস্থ্য সচেতন করার জন্য ‘‘যৌবনের যত্ন’’ নামে একটি বই লেখেন। তবে সে বইয়ের প্রায় সব লেখাই ছিল অনুবাদ। মুহাম্মদ আবুল হুসাইন ১৯৭২ সালের ৯ জুলাই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মুন্সিকান্দিতে নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মোঃ আবুল কাসেম, মায়ের নাম সখিনা বেগম। তিনি নোয়াখালীর সুনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের সারেং বাড়ীর সন্তান। তাঁর দাদা মো আব্দুর রহমান ছিলেন একজন সাড়েং। পিতা বঙ্গবন্ধুর আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণের পর তিনি গণভবনে স্থানান্তর হন। এক পর্যায়ে তিনি সরকারী চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় শুরু করলে ভাগ্য বিপর্যয়ে পড়েন। এর প্রভাব পড়ে তাঁর পরিবারের উপরও। যার কারণে পরিবারের বড় সন্তান মুহাম্মদ আবুল হুসাইন শিশুকাল থেকেই ছিলেন একজন শ্রমজীবী মানুষ। কিন্তু দারিদ্রের কঠিন কষাঘাতের মধ্যেও কখনো লেখা পড়ায় ছেদ পড়তে দেননি। তিনি প্রথমে মিরপুর উপ-শহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা, পরে মগবাজার শাহনূরী উচ্চিবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তখন রীতিমত ফুল টাইম কর্মজীবী হওয়ার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ঢাকা কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের দুই দিকপাল আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এবং আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের সরাসরি ছাত্র ছিলেন তিনি। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ''রবীন্দ্র অধ্যয়ন চক্রেরও সদস্য ছিলেন। মুহাম্মদ আবুল হুসাইনের শিশু বয়স থেকেই লেখা-লেখির প্রতি ছিল প্রবল ঝোঁক। স্কুলে পড়ার সময়ই ঢাকার একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় তাঁর লেখা একটি গল্প 'মিন্তি' প্রকাশ পায়, যা ছিল মূলত তার নিজের জীবনেরই একটি খ-চিত্র। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি বিদেশী পত্রিকা থেকে খাদ্যা নিরাপত্তার উপর একটি ফিচার লেখা অনুবাদ করেন, যা সে সময়ের একটি ম্যাগাজিনে প্রচ্ছদ রচনা হিসেবে ছাপা হয়। সে সময় তিনি হোসেন সৈয়দ নামে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাহিত্য পত্রিকায় গল্প, কবিতা, সাহিত্য সমালোচনা সহ বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখতেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ''দ্রাবিড়'' নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনও সম্পাদনা ও প্রকাশ করতেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি বিভিন্ন সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক পদে কাজ করেন। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইজে) ও ঢাকা সাব-এডিটর কাউন্সিলের সদস্য।