Loading...
জহিরুল চৌধুরী
লেখকের জীবনী
জহিরুল চৌধুরী (Jahirul Chowdhury)

বৃহত্তর সিলেটের মফস্বল শহরে বেডে ওঠা এক তরুণ স্কুল-কলেজের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্কুল জীবনে সঙ্গীত-কলা-সাহিত্য আর ক্রিকেট-ফুটবল নিয়ে যার জীবন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে সে পুকোদস্তুর এক ছাত্রনেতা। ‘৮২ সালে সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘৯০-এর গণ অভ্যুত্থান ছিল যার জীবন সংগ্রামের পাঠ। ছাত্র জীবনে বামপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার কারণে বিপ্লবী ভাবাদর্শে তার দীক্ষা। জীবনকে চ্যালেন্জের মুখে ঠেলে দিতে ভালবাসে সে। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের এক চিরকুট নিয়ে ১৯৯০ সালে সে যোগ দেয় সাংবাদিকতায়। সাম্প্রদায়িকতা ও নীতিহীনতার বিরুদ্ধে যে আপোষহীন, জীবিকার জন্য সে বেছে নেয় সাংবাদিকতা পেশা। ১৯৯১-২০০১, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের দহরম-মহরম শুরু হয়। রমনা বটমূল, সিপিবি, উদীচী প্রভৃতি প্রগতিশীল সংগঠনের উপর সাম্প্রদায়িক অপশক্তির একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। ২০০১ সালে জামায়াতের আশীর্বাদপুষ্ট সরকার গঠনের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের সঙ্গে সংঘাতের এক মামুলিধরণের মামলায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। তখন সে এক প্রকার পালিয়ে আশ্রয় নেয় যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু দেশের মায়া সে ত্যাগ করতে পারে না। দেশের জন্য কিছু করার তাগিদ তাকে পীড়া দেয় অহর্নিশ। সীমাহীন আকাশ, চাঁদ, তারা-সূর্য, উদার প্রকৃতি আর সমুদ্রের কাছে তার দেশে ফেরার আকুতি। পৃথিবী, পৃথিবীর মানুষকে ভালবাসে সে। কিন্তু তার চিরচেনা, চিরদিনের আপন বাংলাদেশের মানুষের মায়ার আকর্ষণ কিছুতেই ত্যাগ করতে পারে না! দেশের প্রকৃতি, মানুষ আর কাঁদামাটির প্রতি সেই ঋণের বোঝা লাঘব করতেই তার নিরন্তর লিখে যাওয়া। আমার যত ঋণ, আমার অনেক আশা এবং এই আমার জীবন গত দশ বছরের লেখালেথির ফসল। বাংলাদেশের ঘটে যাওয়া প্রতিটি বড় ঘটনাকে তিনি তার মত করে উপস্থাপন এবং বিশ্লেষণ করেছেন। একজন প্রবাসীর আত্মপোলব্ধি, একজন রাজনৈতিক কর্মীর স্বেচ্ছা নির্বাসন, এজন ভ্রমণ পিপাসুর বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি, একজন মানবতাবাদীর আর্তনাদ- এসবই উঠে এসেছে গত দশ বছরের রোজনামচায়। পাশাপাশি ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনাও আছে। একত্রে তিনটি বইই পাঠকের ভাল লাগলে এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবেন এই লেখক।