Loading...
ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ
লেখকের জীবনী
ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ (Dr. Qazi Kholiquzzaman Ahmad)

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি থাকলেও ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ নিছক ওই বৃত্তে আবদ্ধ কোনাে ব্যক্তি নন। দেশবাসী তাকে চেনে গণসম্পৃক্ত উন্নয়ন কাঠামাে বিনির্মাণের কৌশল গঠনে একজন ব্যতিক্রমী ভাবুক হিসেবে । অর্থনীতির পন্ডিতি বা তাত্ত্বিক তর্কবিতর্কে অংশগ্রহণ ছাড়াও তাঁর নিজের পছন্দ বিস্তৃত গ্রামবাংলার কৃষি, কৃষক, কৃষিশ্রমিকের সমস্যা সমাধান ও অগ্রযাত্রার পথনির্মাণে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষ। তাদের মূঢ় মূক মুখে ভাষা যােগাবার ঐকান্তিক ব্রতে তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিমগ্ন । তিনি এমন এক উন্নয়ন ভাবনার ব্যবহারিক প্রয়ােগ দেখতে চান, যা প্রান্তজনের মানব-মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকে নিশ্চিত করে। এমন গণদরদী ও প্রগতিপন্থী চিন্তায় বিশ্বাসী বলেই ড. আহমদ ১৯৭১ সালে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয় অর্জন পর্যন্ত মুজিবনগর সরকারের অধীনে পরিকল্পনা সেলে কর্মরত ছিলেন। সদ্যস্বাধীন দেশে Bangladesh Institute of Development Studies (BIDS) পুনর্গঠনে ড. আহমদ সতীর্থ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। উন্নয়ন-ভাবনায় নতুন দিক-নির্দেশনা প্রদান ও গতিশীলতা সৃজনে প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্যতিক্রমী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ (বিইউপি)। ড. আহমদ ঢাকা স্কুল অব ইকনােমিকস প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং বর্তমানে এর গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি একইসাথে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-এর সাধারণ ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান। তিনি ২০০২ থেকে এপ্রিল ২০১০ সময়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির পরপর তিনবার নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন । বাংলাদেশের শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে ড. আহমদ স্বাধীন দেশের প্রথম সর্বজননন্দিত শিক্ষানীতির অন্যতম প্রধান রূপকার। জলবায়ু বিপর্যয়ে দরিদ্র দেশসমূহের প্রতিবাদী কণ্ঠ, টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে অগ্রণী চিন্তক এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযােগিতার দৃঢ় প্রবক্তা হিসেবে তিনি দেশে এবং বিদেশে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্যবিমােচন ক্ষেত্রে গবেষণা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৯ সালে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে। তিনি ২০০৭ সালে শান্তিতে নােবেল পুরষ্কার বিজয়ী জাতিসংঘ আন্তঃরাষ্ট্রীয় জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেল (IPCC)-এর সদস্য। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দেশে বিদেশে প্রকাশিত এ পর্যন্ত তাঁর (এককভাবে বা অন্যদের সঙ্গে যৌথভাবে) উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে লেখা ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ৩৯টি এবং গবেষণা রিপাের্টসহ তাঁর প্রবন্ধের সংখ্যা আড়াই শতাধিক। তিনি Asia Pacific Journal on Environment and Development-এর সম্পাদক।