কথাসাহিত্যিক নাট্যকার ও অনুবাদক আবদুল হক (১৯১৮-১৯৯৭) গত শতাব্দীর বিশের দশকের বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের উত্তরসূরি; প্রাবন্ধিক হিসেবেই সমধিক পরিচিত। স্মৃতিকথা ও দিনলিপির নির্বাচিত অংশ এবং ছড়ানাে ছিটানাে ব্যক্তিগত রচনা মিলিয়ে সম্পন্ন হয়ে উঠেছে তাঁর এই আত্মজীবনী। এতে সংগ্রামশীল সাহিত্য-নিমগ্ন একজন মননশীল ব্যক্তিমানুষকেই খুঁজে পাওয়া যায়! এখানেও তিনি বিজ্ঞানমনস্ক ও মুক্তিবুদ্ধিরই মানুষ। রয়েছে প্রাবন্ধিকসুলভ তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, গভীর অন্তর্দৃষ্টি আর ইতিহাস চেতনার পরিচয়। আপাত অর্থে নিজের কথা বললেও তা কেবল ব্যক্তিবিশেষের আত্মকথন না হয়ে হয়ে উঠেছে। বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজের মানসবিবর্তনের ইতিহাস। আত্মজীবনীমূলক রচনা মহৎ হয়ে ওঠে আত্মস্বীকারােক্তিতেও, কারণ এর লেখক নিজের একজন মূল্যায়নকারীও বটেন! এই আত্মজীবনীও এর ব্যতিক্রম নয়। যে-সব মানুষের সম্পর্কে এখানে মন্তব্য রয়েছে তাতেও রয়েছে অনুকম্পায়ী হৃদয়ের মােহমুক্ত বিচার! ঘটনার নিকটদূরত্বে থেকে লেখা হলেও এই রচনা হয়ে উঠেছে আশ্চর্য নির্মোহতার নিদর্শন!