“প্রেক্ষিতঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
বাংলাদেশের এক দশমাংশ ভূখণ্ড নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠিত। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার সমন্বয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিরূপ, ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, পরিবেশ, জীব ও জনবৈচিত্র, বনভূমি, প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে আন্তর্জাতিক যােগাযােগ, ভূ-রাজনীতি, ভূকৌশলগত কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বহুকাল থেকেই আন্তর্জাতিক মনােযােগের কেন্দ্রবিন্দুতে বর্তমান এশিয়া ও ভারত মহাসাগর কেন্দ্রীক বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরুকরণে পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপরােক্ত বৈশিষ্টের কারণে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলাের আগ্রহে পরিণত হয় বিগত শতাব্দির প্রথমার্ধের শেষ প্রান্তে, ভারতভাগের সময়কাল থেকে। যুগ পরিক্রমায় এই আগ্রহ বেড়েছে এবং বিভিন্ন মােড়কে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক গােষ্ঠীর অনুপ্রবেশ ঘটে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাপ্রবাহে পরােক্ষভাবে পর্দার অন্তরালে অংশগ্রহণ ও হস্তক্ষেপ করতে থাকে। ধীরে ধীরে এই হস্তক্ষেপ প্রবলতর ও বিস্তার লাভ করে, সৃষ্টি করে নানা সঙ্কটের।
প্রথমদিকে বাংলাদেশ এই সঙ্কটের ভয়াবহতা ও পরিণতি সম্পর্কে সম্যক সচেতন ছিলাে এমন ভাবনার যৌক্তিকতা পাওয়া যায় না। এর প্রধান কারণ পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে জাতীয় স্বার্থের নিরীখে পর্যাপ্ত ও গভীর গবেষণার অভাব। এই অভাব পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদাসীনতা ও অবহেলার জন্ম দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দেশবাসীর মনে অনাগ্রহ ও উদাসীনতার সৃষ্টি করে।
এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই কিছু বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক ও গবেষক দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে চেষ্টা করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্ব, সঙ্কট, দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দেশবাসীকে অবগত করাতে। মাহের ইসলাম তাদের অন্যতম।
মাহের ইসলাম কোনাে প্রথাসিদ্ধ গবেষক, প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবী, লেখক বা পেশাদার সাংবাদিক নন। মাহের ইসলামের পার্বত্য চট্টগ্রামে গমন ও অবস্থান পেশাগত কারণে। পেশাগত কারণে বিচরণ ও পড়াশােনা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখা নানা অসঙ্গতি, অবহেলা, ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, রাষ্ট্রবিরােধী বিভিন্ন তৎপরতা তার মনকে ব্যথিত ও আলােড়িত করেছে। একজন খাটি দেশপ্রেমিক মানুষ হিসাবে এসব অসঙ্গতির জবাব দেয়ার জন্য হাতে কলম তুলে নেন তিনি। পূর্বে লেখালেখির কোনাে অভিজ্ঞতা না থাকলেও দেশের প্রতি কর্তব্য ও দায়িত্ববােধ তাকে নিজের হাতে কলম তুলে নিতে বাধ্য করেছে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান রাষ্ট্রবিরােধী নানা তৎপরতা ও অপপ্রচারের জবাব দিতে একের পর এক লিখতে থাকেন তিনি। দায়িত্ব পালনের এক বছরের কিছু অধিককাল সময়ের মধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা প্রকাশ করে ফেলেন। বিষয়ের গুরুত্ব, লেখার মান ও গভীরতা বিবেচনায় সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন সেসব লেখাগুলো পুস্তকাকারে প্রকাশের প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করে। আমরা লেখককে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, তিনি আমাদের এ সুযােগটি দিয়েছেন। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে বিভিন্ন অপশক্তির রাষ্ট্রবিরােধী ও সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের তথ্য, উপাত্তসহ অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ জবাব উঠে এসেছে এই পুস্তকে। এই পুস্তকে প্রকাশিত সকল লেখায় ইতােপূর্বে পার্বত্যনিউজে প্রকাশিত হয়েছে। তাই সম্পাদক হিসাবে এ লেখাগুলাে বিস্তারিতভাবে আমার পূর্বেই পড়া হয়েছে । সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে উপজাতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গােষ্ঠী ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল সম্প্রদায়ের বাংলাদেশ বিরােধী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালি বিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক, একপেশে ও উদ্দেশ্যপ্রণােদিত অপপ্রচারের উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ও যুক্তিসহ উপযুক্ত জবাব এই পুস্তকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। লেখককে ধন্যবাদ জানাই পেশাদারী দায়িত্বের বাইরে এসে দেশের প্রয়ােজনে নিঃস্বার্থভাবে এই গুরুভার গ্রহণ করার জন্য। ধন্যবাদ জানাই জ্ঞান বিতরণীর প্রকাশক সহিদুল ইসলামের প্রতি যিনি যত্নসহকারে বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন । সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে দেশবাসীর মধ্যে যদি কিঞ্চিত পরিমাণও সচেতনতা বৃদ্ধি ঘটে তাহলে লেখক ও আমাদের শ্রম সার্থক বলে গণ্য হবে।
মাহের ইসলাম এর প্রেক্ষিতঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন পাচ্ছেন বইফেরীতে মাত্র 360.00 টাকায়। এছাড়া বইটির ইবুক ভার্শন পড়তে পারবেন বইফেরীতে। Prekkhito Parbotto Chittagong by Maher Islamis now available in boiferry for only 360.00 TK. You can also read the e-book version of this book in boiferry.