ধরুন, পাঁচজন বন্ধু একসাথে দুঘণ্টা সময় কাটালো। নিশ্চয় সেখানে হরেক রকমের আলোচনা হবে, নানা টপিক থাকবে। তবে আপনি নিশ্চিত থাকুন, সেখানে অবশ্যই ‘বিয়ে’ ইস্যু আলোচনার এজেন্ডায় থাকবে। ‘বিয়ে’ ব্যতিরেকে কি আড্ডা জমে? একবার ভাবুন তো, এই জীবনে আাপনার মুখ থেকে কতবার ‘বিয়ে’ শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বিশেষ করে ব্যাচেলর জীবনের কল্পিত রোমাঞ্চ মানেই তো বিয়ে। জীবনের একটা পর্যায় পর্যন্ত বিয়ে আড্ডার ইস্যু হলেও বাস্তবতা কিন্তু আলাদা। কখনো তা ভালো লাগা আর উচ্ছাসের বাঁধ ভাঙ্গার জোয়ার, আবার কখনো তা বিচ‚র্ণ আয়নার টুকরো টুকরো খন্ড। বিয়ে জীবন চক্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিয়ের মাধ্যমেই দুজন নর-নারী পূর্ণতা লাভ করে। একইসাথে স্বপ্ন আর সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ববোধের নাম বিয়ে। বিয়ে তো সেই চুক্তি, যার মধ্য দিয়ে সমাজব্যবস্থা পুরুষকে একজন নারীর সাথে অতি ঘনিষ্টভাবে বসবাস, সুখ-দু:খ, হাসি-কান্না ও দৈহিক চাহিদা ভাগাভাগি করে নিতে স্বীকৃতি দেয় এবং উত্তরাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করে। বিয়েপূর্ব ফ্যান্টাসি, বিয়ে সময়কালীন বাস্তবতা এবং বিয়ে পরবর্তী অভিজ্ঞতা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। মূল সঙ্কট বিয়ের দর্শনের ভিন্নতা। অথচ বিয়ের দর্শন ও প্রাসঙ্গিকতা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে ধর্মে আর প্রচলিত ব্যবস্থাপনায় অনেক আগেই। বর্তমান তারুণ্যের এসবে পাত্তা দেয়ার সময় কোথায়? বস্তুবাদী দর্শনে ব্যক্তিস্বার্থই যেখানে ‘পরম’, সেখানে বিয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট চুক্তি, অধিকার নিয়ে বসে থাকার সময় যে নাই! সুলেখিকা রেহনুমা বিনত আনিস বিয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য, সঙ্কট ও বাস্তবতার এক দারুণ স্কেচ এঁকেছেন ‘বিয়ে’ বইয়ে। সাহিত্যের সঞ্জিবনী রস থাকছে গল্পে, সাথে থাকছে সিরিয়াস কিছু আলাপ। গল্প আর প্রবন্ধের এক দারুণ মিশেল। বিয়ে নিয়ে তরুণ-তরুণীদের স্বপ্ন, চিন্তা ও সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সহায়ক পাঠ্য হবে ‘বিয়ে’ বই ইনশাআল্লাহ। সম্মানিতা লেখিকা এবং গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স-এর পুরো টিমের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভালো থাকুন। চলুন, ‘বিয়ে’ বইটি পড়তে শুরু করি